Description
নিম তেল (Neem Oil) : ত্বকের জন্য এক দারুণ উপাদান হচ্ছে নিম তেল। নিম (বৈজ্ঞানিক নাম: Azadirachta indica) একটি ঔষধি গাছ যার ডাল, পাতা, রস সবই মানুষের দৈনন্দিন জীবনে বহুবিধ কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে। পাতা, ফল, ছাল বা বাকল, নিমের তেল, বীজ। অর্থাৎ এক কথায় নিমের সমস্ত অংশ ব্যবহার করা যায়। ধারণা করা হয় আয়ুর্বেদিক ঔষুধী হিসেবে নিম ভারত অথবা বার্মাতেই প্রথম আবিষ্কৃত হয়।
নিমের পাতা ও বীজকে পিষে নিম তেল তৈরি হয় অথবা নিমের বীজ থেকে নির্যাস বের করে বানানো হয় নিমের তেল। নিমের তেলের রঙ ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। এটি সাধারনত সোনালি হলুদ, হলদে বাদামী, লালচে বাদামী, গাঢ় বাদামী, সবুজাভ বাদামী, উজ্জ্বল লাল হয়ে থাকে। এটির রয়েছে কড়া গন্ধ যা বাদাম আর রসুনের মিশ্র গন্ধের মতো হয়ে থাকে কিছুটা।
নিমের তেলে রয়েছে নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান সেগুলো হলো ফ্যাটি এসিড, ভিটামিন ই, ট্রাইগ্লিসারাইড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি।
নিম তেলের উপকারিতা:
১। ত্বকের কোলাজেনের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। যার প্রভাবে স্কিন টোনের উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না।
২। শুষ্ক ত্বক যাদের, তারা নিয়মিত এই তেল লাগালে সমস্য়া অনেকটাই কমে যায়। প্রতিদিন নারকেল তেল বা অলিভ অয়েলের সঙ্গে নিম তেল মিশিয়ে ভালো করে সারা শরীরে মাসাজ করলে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ফিরে আসতে হতে শুরু হয়।
৩। নিম তেলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান থাকায় এটি যদি মুখে লাগানো যায়, তাহলে ব্রণর সমস্য়া কমতে শুরু করে। ব্রণ কমাতে কয়েক ফোঁটা নিম তেলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা ল্য়াভেন্ডর তেল মিশিয়ে ব্রণর উপর লাগালে ভালো ফল পাওয়া যায়।
৪। শরীরের তারুণ্য ভাব ধরে রাখতে সহায়তা করে।
৫। খুশকির সমস্যা দূর করতে দারুণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৬ ত্বকের একধরনের প্রদাহজনিত রোগ হল একজিমা। নানা কারণে বহু মানুষ এই ধরনের ত্বকের সমস্য়ায় ভুগে থাকেন। একজিমার প্রকোপ কমাতেও নিম তেল দারুন কাজ দেয়।
৭। ত্বকের হাইপারপিগমেন্টটেশন দূর করে
৮ নিমে অ্যান্টিব্য়াকটেকিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান থাকার কারণে ত্বকের উন্মুক্ত ছিদ্র বন্ধ করতে এটি দারুন কাজে আসে। নারকেল তেলের সঙ্গে নিম তেল মিশিয়ে মুখে লাগালে সমস্য়া কমতে শুরু করে।
নিমের তেল ব্যবহারের সতর্কতা:
* নিমের তেল অনেক বেশি শক্তিশালী। তাই এটা সব সময় কোনো না কোনো বাহক তেল যেমন- নারিকেল বা জোজোবা তেলের সাহায্যে অথবা পানির সাথে মিক্স করে ব্যবহার করা উচিত।
* নিমের তেল খাওয়ার উপযুক্ত নয়। তাই কখনই নিমের তেল গ্রহণ করার চেষ্টা করা যাবে না।
* যদি প্রথমবার নিমের তেল ব্যবহার করেন তাহলে আগে অল্প পরিমাণে ব্যবহার করে দেখুন। মাথায় ব্যবহারের সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন মুখের সংস্পর্শে না আসে।
* যদি এতে লালচেভাব সৃষ্টি হয় তাহলে পরে ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হতে হবে অথবা ব্যবহার সম্পূর্ণ বাদ দিতে হবে।
* নিম প্রাচীনকাল থেকেই গর্ভনিরোধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাই কেউ গর্ভাবস্থায় বা সন্তান নিতে ইচ্ছুক হলে নিমের তেল এড়িয়ে চলাই ভালো। এটা উর্বরতা কমায় ও গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ায়।
* যাদের বিভিন্ন রকম ত্বকের জড়তা-বিষয়ক, রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পর্কিত ও বাত জ্বরের সমস্যা আছে তাদের নিম তেল ব্যবহার না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
* ঘন নিম তেলের সংস্পর্শে অ্যালার্জি বা জ্বলুনি সৃষ্টি হতে পারে। তাই ব্যবহারে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।